প্রকাশিত: ০৮/০৯/২০১৮ ৬:৫৯ এএম

নিউজ ডেস্ক::
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৫০ আসনে বিশেষ জরিপ করিয়েছেন। এ জন্য ব্যয় হয়েছে তিন কোটি টাকা। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তিনি আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের জরুরি বৈঠকে এই তথ্য জানিয়েছেন। বৈঠকে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।

বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী ও কার্যনির্বাহী সংসদের একাধিক সদস্য সমকালকে বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের শেষের দিকে অনুষ্ঠেয় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য কয়েক বছর ধরেই মাঠ পর্যায়ে নিবিড়ভাবে জরিপ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি বিভিন্ন জরিপ সংস্থার মাধ্যমে এই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে বিশদ আলোচনা করেছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ৃব্দতি দিয়ে সমকালকে আরও জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে তিনশ’ আসনের জরিপ রিপোর্টের সত্যতা বিস্তারিতভাবে যাচাই-বাছাই করছেন। এমনকি তিনশ’ আসন নিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা এবং জরিপ সংস্থার রিপোর্ট থেকে বাছাই করে ৫০টি আসনে আলাদাভাবে আরেক দফা জরিপ করিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে বলেছেন, তিনি তিনশ’ আসনের মধ্যে ৫০টি আসনে বিশেষ জরিপ করিয়েছেন। আর নিজেই এর তত্ত্বাবধান করছেন।

বিশেষ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এ জন্য ব্যয় হয়েছে তিন কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রতি আসনের জন্য গড়ে ছয় লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এই জরিপের ফল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে বলেছেন, দু-একটি আসনের এমপিদের অবস্থান নড়বড়ে বলে তার ধারণা থাকলেও ওই এমপিদের অবস্থান আগের চেয়ে বর্তমানে আরও শক্ত হয়েছে বলে জরিপ রিপোর্টের তথ্যে বলা হয়েছে। এ সময় কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা ওই এমপিদের নাম জানতে চাইলেও প্রধানমন্ত্রী ইতিবাচক মনোভাব দেখাননি। তবে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন গোয়েন্দা এবং জরিপ সংস্থার জরিপের সঙ্গে ওই ৫০ আসনের জরিপ মিলিয়ে দেখেছেন বলে বৈঠকে জানিয়েছেন। কোন ৫০টি আসনে এই বিশেষ জরিপ চালানো হয়েছে তা বৈঠকে বলেননি প্রধানমন্ত্রী। তবে তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখেই জরিপ চালানো হয়েছে। তিনি এ ক্ষেত্রে গত ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত রাজশাহী, সিলেট এবং বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন সংস্থার জরিপ কার্যক্রম শতভাগ সঠিক হয়েছিল বলে জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে আরও বলেছেন, মন্ত্রী কিংবা এমপি যিনিই হোন না কেন- দলের মনোনয়ন নিয়ে অহেতুক স্বপ্ন দেখে লাভ নেই। অকারণে ঘোরাঘুরি করেও কোনো কাজ হবে না। তদবির কিংবা সুপারিশ চলবে না। জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে যিনি এগিয়ে থাকবেন, তিনিই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাবেন। এর কোনো বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে দলীয় ঐক্য নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

দলের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই বৈঠকে ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের আত্মীয়-স্বজনের অপ্রিয় কর্মকাণ্ডের বিষয় উত্থাপন করলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর সঙ্গে একমত পোষণ করেন বলে একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা নিশ্চিত করেছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর আত্মীয়-স্বজনের অপ্রিয় কর্মকাণ্ডের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। আওয়ামী লীগের একজন নীতিনির্ধারক নেতা সমকালকে জানিয়েছেন, নির্বাচনকালীন সরকারে থাকছেন না ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান ও ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু।

পাঠকের মতামত

পবিত্র ঈদুল ফিতর আজ

‘ঈদ এসেছে দুনিয়াতে শিরনি বেহেশতী/দুষমনে আজ গলায় গলায় পাতালো ভাই দোস্তি’- জাতীয় কবি কাজী নজরুল ...